

লেখকঃ হাসান মাহমুদ
বাহিরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। আজ স্কুল বন্ধ, তাই আবির একটি গোয়েন্দা বিষয়ক বই নিয়ে বারান্দায় বসে বসে পড়ছে। বৃষ্টির শব্দ আর ঠান্ডা মৃদু বায়ু যেন তাঁর পড়ার আগ্রহ আরো বাড়িয়ে তোলছে। গোয়েন্দা গল্পের প্রতিটি লাইন তাকে রহস্য থেকে রহস্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যেন সে হারিয়ে গেছে কোন এক অজানা এক জগতে।
এবার আবির রাহাতের দিকে ফিরে বললোঃ দোস্ত! তুই কখন এসেছিস? রাহাত বললোঃ সেই কবে এসে বসে আছি, তোর তো কোন খবরই নেই। ভাবলাম যেহেতু গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়ছিস, তোকে আপাতত ডিস্টার্ব না করি।
অতঃপর আবির আর রাহাত দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করতে থাকলো। হঠাৎ রাহাত বলে উঠলো “ আবির সেদিন যে তুই বলেছিলে পরীক্ষায় ভালো রিজাল্ট করতে হলে ভালো করে প্রতিটি বইয়ের প্রতিটি অধ্যায় বুঝে বুঝে পড়তে হবে। কোন কিছু রেখে দেওয়া যাবেনা। কিন্তু দোস্ত! আমিতো ভালো করে একটি অধ্যায় পড়তে গেলে পুরো সাপ্তাহ লেগে যায়। আবার পড়া শেষ হলে অনেক কিছুই মনে থাকেনা। এটি কীভাবে দূর করবো? একটু বলে দেয়না। ‘’
অতঃপর আবির চানাচুর আর বাদাম দিয়ে মাখানো মুরি রাহাতের দিকে বাড়িয়ে দিতে দিতে বললোঃ আচ্ছা এগুলো খা, তোকে বলছি এবার মন দিয়ে শোন। “ কোন বই পড়া শুরু করার আগে একটা রুটিন করে নিবি। যেমনঃ কখন কোন বই পড়বে? কোন বই কতদিনে শেষ করবে? একটা বই শেষ করার পর আরেকটি বই পড়বি। আমার মতে প্রথমে তোর কাছে সহজ বইগুলো পড়া শুরু করবি।
এবার যখন কোন অধ্যায় শুরু করবে, তখন হাতে একটি কাঠ পেন্সিল নিয়ে বসবে। প্রতিটি অধ্যায়ের শুরু থেকে ধারাবাহিক পড়ে যাবে, আর শুধু বুঝার চেষ্টা করবে যে, লেখক এখানে কোন শব্দ দিয়ে কী বুঝাতে চাচ্ছেন। প্রথমবার বেশি জোর করে মুখস্থ করতে যাবেনা। যেটি বুঝতে কষ্ট হবে সেটির নিচে দাগ দিয়ে সামনের দিকে যেতে থাকবে। দেখবে এইভাবে খুব দ্রুত একটি অধ্যায় শেষ হয়ে যাবে।
একবার পড়া শেষ হয়ে গেলে, দ্বিতীয়বার পড়া শুরু করবে। দেখবে অধিকাংশ জিনিস জানা হয়ে গেছে। আর যে জায়গাগুলো আগে বুঝতে অসুবিধা হয়েছিলো, এবার সেগুলো বুঝার চেষ্টা করবে। দেখবে খুব সহজে সমাধান পেয়ে যাবে। দ্বিতীয়বার পুরো পাঠ পড়া শেষ হয়ে গেলে পাঠটির সারাংশ কী শুধু তা মনে রাখার চেষ্টা করবে। প্রয়োজনে পাঠের সারাংশ যা তোর বুঝে এসেছে তা একটি খাতায় লেখে নিবে। ব্যাস! এইটুকু কাজ করলে দেখবে খুব দ্রুত সময়ে সকল বইয়ের সকল অধ্যায় পড়া হয়ে যাবে।
যদি আমি আমার কথার সারাংশ বলি, তা হলোঃ
১/ একটি পেন্সিল হাতে নিয়ে একটি অধ্যায় রিডিং পড়া শুরু করা। প্রথমবার পড়ে যেতে যেগুলো কঠিন মনে হবে, তার নিচে দাগ দিয়ে যাওয়া।
২/ প্রথমবার পড়া শেষ হয়ে গেলে দ্বিতীয়বার পড়া শুরু করবে। এবার দাগ দেওয়া যায়গাগুলো বুঝার চেষ্টা করবে।
৩/ দ্বিতীয়বার পড়া শেষ হয়ে গেলে, যা বুঝে এসেছে তার সারাংশ একটি খাতায় লেখে নিবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন