সালাতুত তাসবীহ ১
চার রাকাত
নফল নামায যার প্রত্যেক রাকাতে
“ সুবহানাল্লাহি
ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লহু আকবার “
৭৫ বার এবং
সর্বমোট ৪ রাকাতে ৩০০ বার এই তাসবীহ পাঠ করা হয়। এই নামাযকে সালাতুত তাসবীহ বলে।
এই নামায
দ্বারা জীবনের ছোট-বড় , নতুন- পুরাতন ইচ্ছাকৃত- অনিচ্ছাকৃত , গোপন- প্রকাশ্য সব রকমের
পাপ আল্লাহ ক্ষমা করে দেন।
রাসুল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর চাচা আব্বাস রাঃ কে বলেছিলেনঃ চাচা! পারলে প্রতিদিন এই নামায
পড়ুন , তা না পারলে প্রতি সাপ্তাহে পড়ুন, তা না পারলে প্রতি মাসে, না পারলে প্রতি বৎসরে
, না হয় অন্তত জীবনে একবার হলেও পড়ুন।
এই নামায পড়ার নিয়ম হলোঃ
চার রাকাত সালাতুত তাসবীহ নফল নামাযের নিয়ত করত যথারীরি
সূরা ফাতেহার পর সূরা/কিরাত পাঠ করে তারপর দাঁড়ানো অবস্থাতেই উক্ত তাসবীহ ১৫ বার
পড়বে। তারপর রুকুতে গিয়ে রুকুর তাসবীহ পড়ার পর উক্ত তাসবীহ ১০ বার। তারপর রুকু
থেকে উঠে রাব্বানা লাকাল হামদ বলার পর উক্ত তাসবীহ ১০ বার। তারপর সাজদায় গিয়ে
তাসবীহ বলার পর উক্ত তাসবীহ ১০ বার। সাজদাহ থেকে উঠে দুই সাজদার মাঝখানে বসে ১০
বার । তারপর দ্বিতীয় সাজদায় অনুরূপ ১০ বার। তারপর দ্বিতীয় সাজদাহ থেকে উঠে বসে ১০
বার পড়বে। এই হলো ১ রাকাতে ৭৫ বার।
এরপর আল্লাহু আকবার বলা ব্যতিত দ্বিতীয় রাকাতের জন্য উঠে
দাঁড়াবে ( কেননা দ্বিতীয় রাকাতে উঠার সময়ের তাকবীর দ্বিতীয় সাজদাহ থেকে উঠে বসার
সময় দেওয়া হয়ে গেছে ) ।
যখন দ্বিতীয় রাকাতে আত্যাহিয়্যাতু ... পড়ার জন্য বসবে , তখন
আগে উক্ত তাসবীহ ১০ বার পড়বে তারপর আত্যাহিয়্যাতু পড়বে।
তারপর আল্লাহু আকবর বলে তৃতীয় রাকাতের জন্য উঠে দাঁড়াবে।
অতঃপর তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে উক্ত নিয়মে উক্ত তাসবীহ পাঠ করবে।
উল্লেখ্যঃ তৃতীয় রাকাতের দ্বিতীয় সাজদা থেকে উঠে তাসবীহ
পড়ার পর ৪র্থ রাকাতের জন্য উঠার সময় ও আল্লাহু আকবার বলবে না।
জানার বিষয়ঃ
কোন এক স্থানে উক্ত তাসবীহ পড়তে সম্পূর্ণ ভুলে গেলে বা ভুলে
নির্দিষ্ট সংখ্যা থেকে কম থেকে গেলে । পরবর্তীতে যে রুকুনেই মনে হবে, তখনই
সেখানকার সংখ্যার সাথে ছুটে যাওয়া তাসবীহগুলো আদায় করে নিবে।
আর নামাযে কোন কারণে সাজদায়ে সাহু ওয়াজিব হলে। সেই সাজদা
এবং তাঁর মধ্যকার বৈঠকে উক্ত তাসবীহ পাঠ করতে হবেনা।
তাসবীহের সংখ্যা স্মরণ রাখার জন্য আঙ্গুল বাহির করে দেখে
দেখে গণনা করা যাবেনা। তবে আঙ্গুল চেপে চেপে স্মরণ রাখা যেতে পারে।
বিঃদ্রঃ সালাতুত তাসবীহ পড়ার আরো একটি নিয়ম রয়েছে । তবে উপরোল্লিখিত
নিয়মটি উত্তম।
দ্বিতীয় নিয়মে যদি কেহ পড়তে চায়। তাহলে হাত বাধার পর প্রথম
রাকাতে ছানা তথা সুবহানাকা ... পাঠ করার পর উক্ত দুআটি ১৫ বার এবং সূরা/ কিরাত
শেষে রুকুর পূর্বে ১০ বার পড়বে। তারপর রুকুতে, রুকু থেকে খাড়া হয়ে। তারপর প্রথম
সাজদায় গিয়ে , প্রথম সেজদা থেকে উঠে বসে, দ্বিতীয় সাজদায় পূর্বের নিয়মে উক্ত
তাসবীহ ১০ বার করে পড়বে। তবে এই নিয়মে
দ্বিতীয় সাজদা থেকে উঠে বসে ১০ বার পড়তে হবেনা। বরং দ্বিতীয় সাজদা থেকে সোজা
দাড়িয়ে যাবে। দ্বিতীয় ,তৃতীয়, চতুর্থ রাকাতে ও সূরা/ কিরাতের পূর্বে ১৫ বার এবং
সূরা কিরাতের পর রুকুর পূর্বে ১০ বার করে উক্ত তাসবীহ পাঠ করবে । এ নিয়মে প্রথম এবং
শেষ বৈঠকে বসে আত্যাহিয়্যাতু-র পূর্বে ১০ বার উক্ত তাসবীহ পাঠ করতে হবেনা।
মনে রাখতে হবেঃ
এই নামায একাকী পড়তে হয়। জামাতে হবেনা।
মাকরূহ ওয়াক্ত ব্যতীত দিবা –রাত্রির যেকোন সময়ে এই নামায
পড়া যায়।
যেকোন সূরা/ কিরাত দিয়ে এই চার রাকাত নামায পড়া যায়।
এই চার রাকাত নামাযের নিয়ত বাংলায় “ চার রাকাত সালাতুত
তাসবীহের নিয়ত করছি “ মনে মনে ইচ্ছা করলেই হয়ে যায়।
যারা আরবীতে নিয়ত করতে চান , বলবেন “ নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া
লিল্লাহি তা’আলা আরবাআ রাকাতি সালাতি তাসবীহ ‘
অর্থঃ “ আমি চার
রাকআত সালাতুত তাসবীহের নিয়ত করছি”
সূত্রঃ
১/ তিরমিযি শরীফ ( সালাতু
তাসবীহ অধ্যায় )
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন